ঢাকা ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সমন্বয়ক পরিচয়ে অপহরণ করে ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ২ চাযের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে যুবলীগ নেতা পুলিশের হাতে আটক হাতে ছুরি নিয়ে বিমান হাইজ্যাকের চেষ্টা, প্রাণ বাঁচাতে গুলি চালালেন সহযাত্রী, মাঝআকাশে তুমুল হইচই চমেক হাসপাতাল থেকে পালানো হাতকড়াসহ সন্ত্রাসী রফিক গ্রেফতার বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের নিষ্পত্তি চাই চট্টগ্রাম নগরীতে কোস্টগার্ডের অভিযানে মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ফটিকছড়িতে বাঁশের সেতু পার হওয়ার সময় নদীতে পরে এক যুবক নিখোঁজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আলিউজ্জামানকে কুপিয়ে জখম খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীসহ মোট ৬ জনকে অপহরণ সিটি কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে বৈঠক

বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের নিষ্পত্তি চাই

নিউজ ডেক্স
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১২ বার পড়া হয়েছে

চাটগাঁইয়া ওয়েবডেক্স:

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সম্পর্ক মজবুত করতে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে বলেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে একাত্তরে গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা এবং প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণও চেয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে বৈঠকে এমন আলোচনা হওয়ার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। খবর বিডিনিউজের।

বৈঠকের পর বিকালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমি পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন– আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া। আমরা বলেছি, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির মাধ্যমে একটি মজবুত, কল্যাণমুখী ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করি এবং এই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী ছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা যেটা বলেছেন যে, বিষয়টা নিয়ে তারা এনগেইজড থাকবেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় থাকবেন তারা, সামনের বৈঠকগুলোতে। দীর্ঘদিন পর এই বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা জিনিস আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, পাকিস্তানের সাথে আজকে যে বৈঠকটা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটি নিয়মিত বৈঠকই হওয়ার কথা। কিন্তু এই বৈঠক সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। কাজেই ২০১০ সালের দেড় দশক পরে প্রথম যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই বৈঠকে আমরা আশা করি না যে, সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার একটা সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।

ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণের বিষয়ে এক প্রশ্নে জসীম উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে যে হিসাবটা আছে, সেখানে দেখানো আছে যে, বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক ডেপুটি চেয়ারম্যানের একটা হিসাব অনুযায়ী, (এটা) ৪ বিলিয়ন ডলার। আরেকটা হিসাবে বলা আছে, ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন। আমরা আজকের আলোচনায় এই ফিগারটাই বলেছি। এটা একটা। আরেকটা হচ্ছে, ১৯৭০ সালের নভেম্বরে যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়, সেখানে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্র এবং সংস্থা ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমপরিমাণ অর্থ দান করেছিল, সেটাও আমরা এই বৈঠকে হিস্যা চেয়েছি।

উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে তিনি বলেন, এখন দুই দেশের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজতে হবে। আমনা বালুচ বলেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে বিশাল আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমরা তা ব্যবহার করতে পারছি না। প্রতিবার সুযোগ হাতছাড়া করা চলবে না। তিনি দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসায়িক পর্যায়ের (বিটুবি) সংযোগ এবং সর্বস্তরে সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে বৈঠক

বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের নিষ্পত্তি চাই

আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

চাটগাঁইয়া ওয়েবডেক্স:

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সম্পর্ক মজবুত করতে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে বলেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে একাত্তরে গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা এবং প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণও চেয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে বৈঠকে এমন আলোচনা হওয়ার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। খবর বিডিনিউজের।

বৈঠকের পর বিকালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমি পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন– আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া। আমরা বলেছি, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির মাধ্যমে একটি মজবুত, কল্যাণমুখী ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করি এবং এই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী ছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা যেটা বলেছেন যে, বিষয়টা নিয়ে তারা এনগেইজড থাকবেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় থাকবেন তারা, সামনের বৈঠকগুলোতে। দীর্ঘদিন পর এই বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা জিনিস আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, পাকিস্তানের সাথে আজকে যে বৈঠকটা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটি নিয়মিত বৈঠকই হওয়ার কথা। কিন্তু এই বৈঠক সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। কাজেই ২০১০ সালের দেড় দশক পরে প্রথম যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই বৈঠকে আমরা আশা করি না যে, সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার একটা সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।

ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণের বিষয়ে এক প্রশ্নে জসীম উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে যে হিসাবটা আছে, সেখানে দেখানো আছে যে, বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক ডেপুটি চেয়ারম্যানের একটা হিসাব অনুযায়ী, (এটা) ৪ বিলিয়ন ডলার। আরেকটা হিসাবে বলা আছে, ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন। আমরা আজকের আলোচনায় এই ফিগারটাই বলেছি। এটা একটা। আরেকটা হচ্ছে, ১৯৭০ সালের নভেম্বরে যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়, সেখানে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্র এবং সংস্থা ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমপরিমাণ অর্থ দান করেছিল, সেটাও আমরা এই বৈঠকে হিস্যা চেয়েছি।

উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে তিনি বলেন, এখন দুই দেশের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজতে হবে। আমনা বালুচ বলেন, আমাদের নিজেদের মধ্যে বিশাল আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমরা তা ব্যবহার করতে পারছি না। প্রতিবার সুযোগ হাতছাড়া করা চলবে না। তিনি দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসায়িক পর্যায়ের (বিটুবি) সংযোগ এবং সর্বস্তরে সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।