ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সারা দেশে সব মসজিদে একই সময় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দক্ষিণ চট্টগ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী পুলিশের হাতে আটক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত রাঙামাটিতে ক্ষুদ্র নৃৃ-গোষ্ঠিদের তিনদিনব্যাপী বৃহত্তর সামাজিক ‘বৈসাবি’ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু জানেন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন দেশ কোনটি? ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের দাবিতে গাজীপুরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুর মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে যোগ না দেয়ায় ২ পোশাক কারখানায় ভাঙচুর, গ্রেফতার ৪৫ পুলিশের জালে বিদেশি পিস্তলসহ ইসরাফিল নামে এক যুবক আটক আলেম সমাজের কর্মসূচিতে মানুষের ঢল, ভোটের মাঠে নেই কেন জোয়ার চট্টগ্রামে অনলাইন লেনদেনের যুগে বাঙালির জীবন থেকে কি হারিয়ে যাচ্ছে পহেলা বৈশাখের হালকাতা?

চট্টগ্রামে অনলাইন লেনদেনের যুগে বাঙালির জীবন থেকে কি হারিয়ে যাচ্ছে পহেলা বৈশাখের হালকাতা?

মহানগর ডেক্স
  • আপডেট সময় : ০৬:১২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

চাটগাঁইয়া ওয়েবডেক্স: একসময় পয়লা বৈশাখ মানে বাঙালি ব্যবসায়ীদের কাছে ছিল নতুন বছরের নতুন করে হিসাব শুরুর দিন। হালখাতা নামে পরিচিত এই প্রথা ছিল পুরনো বছরের যাবতীয় হিসেব নিকেশ মিটিয়ে নতুন করে ক্রেতা এবং বিক্রেতার পথ চলার প্রতীক। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউয়ের ঝাপটা আর ডিজিটালাইজেশনের ধাক্কায় ক্রমশই গুরুত্ব হারাচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যের হালখাতা।

একসময় পয়লা বৈশাখের দিন ব্যবসায়ীরা যে যার ধর্ম অনুসরণ করে সৃষ্টিকর্তার নামে প্রার্থণা করে দিনটা শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে সারা বছর যাবতীয় হিসাব-নিকেশ করতেন।

তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইন লেনদেন জনপ্রিয় হতে থাকায় ধীরে ধীরে কমছে হালখাতার গুরুত্ব। গুটিকয়েক দোকানে এখনও পুরনো ঐতিহ্য মেনে নববর্ষের দিন হালখাতা চালুর রেওয়াজ থাকলেও তা বহু অংশে আলঙ্কারিক।

নগরীর খাতুনগন্জের প্রবীণ ব্যবসায়ী জফুর আলম সওদাগর বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখতাম হালখাতার দিন দোকানে মিষ্টি বিতরণ করা হত। কোথাও কোথাও বসেও খায়ানোর ব্যবস্থা হত। এর ফলে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হত। তবে এখন বেশিরভাগ লেনদেনই ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে এবং হিসাব কম্পিউটারে রাখা হচ্ছে। তাই হালখাতা করার আনন্দ ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে বাঙালির জীবন থেকে।’

শ্যামল বিশ্বাস নামে রিয়াজুদ্দিন বাজারের এক আড়তদার দোকানের মালিক বলেন, ‘আর্থিক অসুবিধার কারণে ধার বাকিতে কাজ দিন দিন কমে আসছে। তার ফলে অনেক ব্যবসায়ীর ইচ্ছা থাকলেও তাঁরা আর হালখাতা করছেন না বা পয়লা বৈশাখের দিন আলাদা করে গ্রাহকদেরকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এর ফলে গত কয়েক বছরে হালখাতার চাহিদা খুবই কমে এসেছে। নববর্ষের আগে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি হালখাতা এখন আমার দোকান থেকে বিক্রি হয়।’

তবে হালখাতার চাহিদা কমলেও সেই পুরনো ঐতিহ্য গত ২৫ বছর ধরে বজায় রেখেছেন নগরীর চাকতাই-খাতুনগন্জ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘হালখাতা হল নববর্ষের দিন ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার একটি দিন। বহু আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও এখনও আমি আমার দোকানে হালখাতা কিনে ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে এই দিনটি পালন করি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে অনলাইন লেনদেনের যুগে বাঙালির জীবন থেকে কি হারিয়ে যাচ্ছে পহেলা বৈশাখের হালকাতা?

আপডেট সময় : ০৬:১২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

চাটগাঁইয়া ওয়েবডেক্স: একসময় পয়লা বৈশাখ মানে বাঙালি ব্যবসায়ীদের কাছে ছিল নতুন বছরের নতুন করে হিসাব শুরুর দিন। হালখাতা নামে পরিচিত এই প্রথা ছিল পুরনো বছরের যাবতীয় হিসেব নিকেশ মিটিয়ে নতুন করে ক্রেতা এবং বিক্রেতার পথ চলার প্রতীক। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউয়ের ঝাপটা আর ডিজিটালাইজেশনের ধাক্কায় ক্রমশই গুরুত্ব হারাচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যের হালখাতা।

একসময় পয়লা বৈশাখের দিন ব্যবসায়ীরা যে যার ধর্ম অনুসরণ করে সৃষ্টিকর্তার নামে প্রার্থণা করে দিনটা শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে সারা বছর যাবতীয় হিসাব-নিকেশ করতেন।

তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইন লেনদেন জনপ্রিয় হতে থাকায় ধীরে ধীরে কমছে হালখাতার গুরুত্ব। গুটিকয়েক দোকানে এখনও পুরনো ঐতিহ্য মেনে নববর্ষের দিন হালখাতা চালুর রেওয়াজ থাকলেও তা বহু অংশে আলঙ্কারিক।

নগরীর খাতুনগন্জের প্রবীণ ব্যবসায়ী জফুর আলম সওদাগর বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখতাম হালখাতার দিন দোকানে মিষ্টি বিতরণ করা হত। কোথাও কোথাও বসেও খায়ানোর ব্যবস্থা হত। এর ফলে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হত। তবে এখন বেশিরভাগ লেনদেনই ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে এবং হিসাব কম্পিউটারে রাখা হচ্ছে। তাই হালখাতা করার আনন্দ ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে বাঙালির জীবন থেকে।’

শ্যামল বিশ্বাস নামে রিয়াজুদ্দিন বাজারের এক আড়তদার দোকানের মালিক বলেন, ‘আর্থিক অসুবিধার কারণে ধার বাকিতে কাজ দিন দিন কমে আসছে। তার ফলে অনেক ব্যবসায়ীর ইচ্ছা থাকলেও তাঁরা আর হালখাতা করছেন না বা পয়লা বৈশাখের দিন আলাদা করে গ্রাহকদেরকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এর ফলে গত কয়েক বছরে হালখাতার চাহিদা খুবই কমে এসেছে। নববর্ষের আগে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি হালখাতা এখন আমার দোকান থেকে বিক্রি হয়।’

তবে হালখাতার চাহিদা কমলেও সেই পুরনো ঐতিহ্য গত ২৫ বছর ধরে বজায় রেখেছেন নগরীর চাকতাই-খাতুনগন্জ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘হালখাতা হল নববর্ষের দিন ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার একটি দিন। বহু আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও এখনও আমি আমার দোকানে হালখাতা কিনে ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে এই দিনটি পালন করি।’